softdeft

গাংনীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ

গাংনীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ

ছাত্রীদেরকে উত্ত্যক্ত করার অপরাধে গাংনী থানাপাড়া (নব) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুব উল আলম কাজলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিভাবক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীদের একাধিক অভিভাবক অভিযোগ পত্রটি গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহার দপ্তরে জমা দেন। যথাযথভাবে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযোগ পত্রটি উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিনের দপ্তরের প্রেরণ করা হয়েছে।
ওই শিক্ষক মেহেরপুরের গাংনী পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ড থানাপাড়া গ্রামে অবস্থিত (নব) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত আছেন। স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিভাবকগণের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক মাহাবুব উল আলম কাজল প্রাইভেট পড়ানো, জ্যামিতি শেখানো ও পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে ছাত্রীদেরকে ভোর সাড়ে পাঁচটায় তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরা, স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়া এমনকি ছাত্রীদের পোশাকের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না। লাঞ্ছিত শিক্ষার্থীরা অন্য স্কুলে ভর্তির কথা চিন্তা ভাবনা করছে।
ঘটনাটি এলাকার লোকমুখে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানান। অভিভাবকদের অনেকেই তাদের সন্তানকে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরিয়ে নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন।
ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর পিতা মকবুল হোসেন তার লিখিত অভিযোগে জানান, প্রাইভেট পড়ানো, জ্যামিতি শেখানো ও পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে ছাত্রীদেরকে ভোর সাড়ে পাঁচটায় প্রধান শিক্ষক কাজল পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীদের তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরা, স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়া, এমনকি ছাত্রীদের পোশাকের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মাহাবুব উল আলম কাজলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
(নব) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও মহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়া মোহাম্মদ আহসান মাসুম বলেন, কাজল মাস্টারের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগের
কথা শুনেছি। তবে এটাও শুনেছি সে নাকি বিষয়টি আপোষ করে ফেলেছে।
(নব) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির
সেক্রেটারী ও বড় বামন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, বিষয়টি নেক্কারজনক। ঘটনা সত্য হয়ে থাকলে অথবা প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে দোষী প্রমাণিত হলে তার অবশ্যই বিচার হোক সেটা আমি চাই। সেই সাথে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিন জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বা তার পরিবারের পক্ষ বা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তর থেকে আমাকে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। যথাযথভাবে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রীতম সাহা জানান, ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি যথাযথভাবে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারের দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে ওই অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্যে সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে আরো একটি আবেদনপত্র দাখিল করা হয়েছে। সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনাটির আসল রহস্য উন্মোচন করে প্রকৃত দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

Total Page Visits: 318 - Today Page Visits: 6