নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। আজ শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে ঢাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নরসিংদী-১ সদর আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উদ্দেশে ‘মাইরের ওপর ওষুধ নাই’ বলে বক্তব্য দেওয়াসহ আচরণবিধির অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার ওমর ফারুক বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় এ মামলা করা হয়। একই সঙ্গে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসানুল ইসলাম ওরফে রিমনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনি আইন লঙ্ঘনের এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, জানতে চেয়েছে ওই আসনের নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি।
বৃহস্পতিবার রাতে এই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির সদস্য নরসিংদীর যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ নাহিদুর রহমান নাহিদ। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী-১ সদর আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পেটানোর হুমকির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
গত বুধবার নরসিংদী ক্লাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলামের (বীরপ্রতীক) একটি মতবিনিময় সভা হয়। সভায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমন তাঁর বক্তব্যে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পেটানোর হুমকি দেন। মুহূর্তের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
ভিডিওতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, ‘কোনো স্বতন্ত্র-মতন্ত্র আমরা চিনি না, মাইরের ওপর কোনো ওষুধ নাই। ছাত্রলীগের কোনো পোলাপান স্বতন্ত্ররে মানত না। সতন্ত্ররে কেমনে পিডাইতে হয়, হেয় দেখাইছে। হেরে আমরা হেমনেই পিডামো। এই শহরে, এই সদরের কোনো এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কোনো জায়গা দেওয়া যাবে না। তারা নৌকার বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী, তারা দেশবিরোধী।’
গ্রেপ্তার হওয়ার আগে দেওয়া এক বক্তব্যে নিজেকে আওয়ামী লীগ তথা দলের নিবেদিত প্রাণ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যানগার্ড উল্লেখ করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, ‘দলীয় যারা নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবে, নৌকাকে ডুবাতে যারা অবস্থান নিবে, আমি মনে করি তারা আওয়ামী লীগের বিরোধী। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরোধী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিরুদ্ধে তারা অবস্থান করতেছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছি। নৌকাকে বিজয়ী করতে যা যা করার দরকার তাই করব।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রবিউল আলম বলেন, নিবার্চনি আচরণবিধি ভঙ্গ করে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ওমর ফারুক বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় এ মামলা করেন। একই সঙ্গে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এমন বক্তব্য হুমকি-ধমকি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করে। নির্বাচনি আইন লঙ্ঘনের এমন ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।’
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন চন্দ্র সরকার বলেন, সদর থানার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আইনআনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এনটিভি অনলাইন থেকে সংগৃহীত