softdeft

নরসিংদীতে ভুয়া পরোয়ানায় এক বৃদ্ধের ৫ দিন কারাবাস

নরসিংদীতে ভুয়া পরোয়ানায় এক বৃদ্ধের ৫ দিন কারাবাস

ফোকাস ডেক্স । নরসিংদীর মনোহরদীতে আবদুর রাশিদ (৬২) নামের এক ব্যক্তি ভুয়া পরোয়ানায় পাঁচ দিন কারাবাস করেছেন। সোমবার দুপুরে আদালতের নির্দেশে নরসিংদীর জেলা কারাগার থেকে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মনোহরদী থানা–পুলিশ আবদুর রাশিদকে তাঁর নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। তিনি মনোহরদী উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের মৃত ছমির উদ্দিনের ছেলে। পরিবারের অভিযোগ, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন প্রতারণার মাধ্যমে রাশিদকে হয়রানি করেছেন।
এ প্রসঙ্গে মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান বলেন, ‘ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের পাঠানো একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নরসিংদীর পুলিশ সুপারের কার্যালয় হয়ে আমাদের থানায় আসে।
আদালতের সেই আদেশ তামিল করেছেন আমাদের একজন উপপরিদর্শক (এসআই)। ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ভুয়া না সঠিক, তা আমাদের পক্ষে যাচাই করা মুশকিল। তবে পরে জানতে পেরেছি, সেটি ভুয়া ছিল।’
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৭ আগস্ট ওই আদেশ মনোহরদী থানায় আসে। থানার ওসি আনিচুর রহমান সেটি তামিল করার জন্য এসআই ওমর ফারুককে দায়িত্ব দেন। ১৯ আগস্ট দুপুরে আবদুর রাশিদকে তাঁর নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেন এসআই ওমর ফারুক। প্রথমে তাঁকে মনোহরদী থানায় নেওয়া হয়। পরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে ওই দিন বিকেলেই তাঁকে নরসিংদী জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এসআই ওমর ফারুক বলেন, ‘আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের জন্যই আমি রাশিদকে গ্রেপ্তার করেছিলাম। ওই সময় তাঁর পরিবারের সদস্যরা বলেছিলেন, এমন কোনো মামলা তাঁর বিরুদ্ধে নেই। কিন্তু আমি শুধু আমার দায়িত্ব পালন করেছি।’
পরিবার বলছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে পরিবারের সদস্যরা আইনজীবীদের কাছে গেলে তাঁরা জানান, যেহেতু এটি ঢাকার সিএমএম আদালতের বিষয়, তাই নরসিংদীর আইনজীবীদের তেমন কিছু করার নেই। পরে পরিবারের সদস্যরা ঢাকার ওই আদালতের আইনজীবী আবু সায়ীদ সিদ্দিকীর সহযোগিতা নেন। তিনি যাচাই করে জানান, ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানাটি ভুয়া। গত শুক্র ও শনিবার আদালত বন্ধ ছিল। তাই পরিবারের সদস্যরা রোববার সকালে ঢাকার আদালতে যান।

আইনজীবী আবু সায়ীদ সিদ্দিকী বলেন, রোববার দুপুরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালতে আবদুর রাশিদের মুক্তির আবেদন করা হয়। পরে বিচারক ওই পরোয়ানার স্মারক নম্বর, সিল ও স্বাক্ষর যাচাই করার জন্য বেঞ্চ সহকারীকে নির্দেশ দেন। বেঞ্চ সহকারীর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গ্রেপ্তারি পরোয়ানার স্বাক্ষরটি জাল। এই আদালত থেকে এমন কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিই করা হয়নি। এরপর রাশিদকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার জন্য নরসিংদীর জেল সুপারকে নির্দেশ দেন বিচারক।

আবদুর রাশিদের ছেলে জহিরুল ইসলাম বলেন, বসতবাড়ির জমি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে দূরসম্পর্কের এক আত্মীয়ের ছয় বছর ধরে বিরোধ চলছে। এর জেরে অন্তত পাঁচটি মামলাও চলছে। প্রতিপক্ষের লোকজনই তাঁদের হয়রানি করতে প্রতারক চক্রের সহায়তায় ওই ভুয়া পরোয়ানা তৈরি করেন বলে তাঁদের ধারণা।

নরসিংদীর জেল সুপার মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে ডাকযোগে পাঠানো আবদুর রাশিদের মুক্তির নির্দেশটি আমরা সোমবাার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে হাতে পাই। পরে সেটি যাচাই করার পর বেলা দুইটার দিকে আবদুর রাশিদকে নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে

Total Page Visits: 772 - Today Page Visits: 1