softdeft

মেহেরপুরে প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি অপকর্মের প্রতিবাদ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

মেহেরপুরে প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি অপকর্মের প্রতিবাদ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

মেহেরপুর প্রতিনিধি । মেহেরপুর সদর উপজেলার বর্শিবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের দুর্নীতি অপকর্মের বিরুদ্ধে এলাকার সচেতন জনগণ ও অভিভাবকদের প্রতিবাদ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেইসাথে প্রধান শিক্ষক সহসহ চার শিক্ষক-কর্মচারীকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করেছে গ্রামবাসী ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
রবিবার সকালে স্কুল প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে গ্রামবাসী এ ঘোষনা দেয়। বাকি তিনজন হলেন প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী সহকারি শিক্ষক নারগিস খাতুন, ভাগ্নে আঁখিতারা ও ভাতিজা আবু সাইদ।

অভিভাবক হাবিবুর রহমান খোকনের নেতৃত্বে মানববন্ধন পরিচালনা করেন বারাদি ইউনিয়ন যুব লীগের সভাপতি সাইদ ইকবাল রিংকু।
মানববন্ধনে বক্তারা প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদকে বিএপি-জামায়াতের ক্যাডার, দুনীর্তিবাজ, খুনি আখ্যায়িত করে তার বিচার ও স্কুল থেকে বহিস্কারের দাবি তোলেন এবং যতদিন না তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হবে ততদিন আন্দোলন চলতে থাকবে বলে হুশিয়ারি দেন।
এক শিক্ষার্থীর ভাই হাবিবুর রহমান লিখন বলেন, বর্শিবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগ না থাকায় ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে আমার ভাইকে অন্যস্কুলে ভর্তি করার জন্য বিদ্যালয় থেকে টিসি ( বদলি সনদ) চেয়ে আবেদন করি। কিন্তু ১১ মাস পার হলেও তিনি টিসি দেননি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার , উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বলেও কাজ হয়নি। তাই আজ আমরা স্কুলে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করছি।
শিক্ষার্থী আজিজজুল হক বলেন, এসসসি পরীক্ষার সময় আমাকে ১১ বিষয়ে ফেল দেখিয়ে বিষয় প্রতি এক হাজার করে ১১ হাজার টাকা দাবি করেন প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। পরে ৭ হাজার টাকা দিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে দেয়।


নাজাত হোসেন নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাকে ৫ বিষয়ে ফেল করিয়ে দিয়ে ৫হাজার টাকা দাবি করেন। পরে দুইশ টাকা কম ৪৮০০ টাকা দিলে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেয়। আমরা প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের বিচার চাই, তাকে বহিস্কার করা হোক।
স্কুল থেকে বিতাড়িত ও জমিদানকারী সহকারি প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন, স্কুল প্রতিষ্ঠার করার সময় আমার বাবা ৪০ শতক জমি দান করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমি ও আমার স্ত্রী এখানে শিক্ষকতা করি। পরে ২০১৯ সালে এমপিও হওয়ার সময় আমাদের কাছে থেকে আবার টাকা দাবি করেন প্রধান শিক্ষক। তখন টাকা না দেওয়ায় আমাদের এমপিও ভুক্ত করা হয়নি। সাবেক উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিনয় কুমার চাকীর যোগসাজশে প্রধান শিক্ষক এ ধরণের দুর্নিতী করেছেন।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস বলেন, প্রতিষ্ঠার সময় আমার হাত দিয়ে যে সমস্ত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে দু একজন আছেন। কিন্তু এখন অধিকাংশ শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অনিয়ম দুর্নীতি করে। এমনকি আমার স্বাক্ষর জাল করেও একজন শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমি এই দুর্নীতি গ্রস্থ প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
১৩ বছর চাকরি করার পর স্কুল থেকে বিতাড়িত অফিস সহকারি আনিছুর রহমান বলেন, বর্তমান সভাপতি গোলাম মোস্তফা শান্তি ও প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের দুর্নীতির কারণে স্কুল ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছি। আমি ওই দুইজনের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ফয়েজ উদ্দীন জানান, প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের দুর্নীতি বিরুদ্ধে যে শিক্ষকই কথা বলেছেন তাকেই বিতাড়িত করা হয়েছে। একজন হত্যা মামলার আসামি কিভাবে শিক্ষক হয়। দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক বার বার দুর্নীতি করে কিভাবে এ ধরণের দুর্নীতি করে স্কুলে ঠিকে থাকতে পারে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার প্রশ্ন? আমি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের কাছে প্রধান শিক্ষকের বিচার চাই।
এ সময় মানববন্ধনে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, মুক্তিযোদ্ধাসহ দুই শতাধিক এলাকাবাসী অংশ গ্রহণ করেন।

Total Page Visits: 864 - Today Page Visits: 1