softdeft

মেহেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীর উপর হামলা

মেহেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীর উপর হামলা

মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আশিক নামের এক কর্মীর উপর হামলা চালিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে মৃত কাদা মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম, বানির ছেলে শাকিল, মৃত লিটনের ছেলে রাব্বি, ইউপি সদস্য হাফিজ, শোভন, রিজভী ও লিটনের বিরুদ্ধে। এসময় হযরত নামের অপর এক ব্যাক্তিকেও মারধর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আমঝুপি পশ্চিমপাড়ার মোড়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আমঝুপি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম টিসিবি কার্ডের পরিবর্তে পছন্দের লোকজনকে স্লিপ দিয়ে টিসিবি পণ্য দেওয়া ও বিভিন্ন অনিয়ম করে আসছিলো। যে কারণে জেলা প্রশাসক বরাবর এ বিষয়ে অভিযোগ দিলে পণ্য বিতরণ বন্ধ করে দেয়। আজকে আবার টিসিবি পণ্য দেওয়া শুরু হয়। টিসিবি পণ্য বিতরণে আজকেও সাইফুল চেয়ারম্যানের ভাই শফিকুল, মৃত লিটনের ছেলে রাব্বি ও তাদের লোকজন অনিয়ম করার চেষ্টা করছিল। বিষয়টি জানতে গিয়ে হামলার স্বীকার হন দুইজন। হযরত বলেন, আমি পেশায় একজন ড্রাইভার। মাঠে ঘাস আনতে যাওয়ার সময় টিসিবি পণ্য দিচ্ছে দেখে সেখানে জিজ্ঞাসা করতে যায় আমাদের কবে দেওয়া হবে। বিষয়টি আমি জিজ্ঞাসা করে চলে আসার সময় আশিক আমাকে বলে একটু দাঁড়িয়ে যান ইউএনও সাহেব আসছে। তখন আমরা একটি চায়ের দোকানে বসি। ইউএনও সাহেব আসার পর আমরা স্যারের কথা শুনছি এমন সময় শফিকুল মিয়া আমার টুটি চেপে ধরে আমাকে বলে ভালো হয়ে যা। তখন আমি বলি আমার কি অপরাধ। বিষয়টি আমি ইউএনওকে বললে তিনি বলেন আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি। তারপরেই আমাকে মারধর শুরু করে। এসময় আসলাম নামের একজন আমাকে রাস্তায় এনে বাড়ি চলে যেতে বলে। আমি মোটরসাইকেলে উঠবো এমন সময় আবারও শফিকুল মিয়া আমার কলার ধরে কিল—ঘুষি শুরু করলে রাব্বি গ্রুপের ১০—১২ জন মারধর করে।
আহত আশিক বলেন, আমি টিসিবির ওখানে গিয়ে দেখি সাইফুল চেয়ারম্যান, শফিকুল ও রাব্বি লোকজন ওখানে ছিল। আমি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী হিসেবে আহবায়ক ইমতিয়াজকে ফোন দিই। ইমতিয়াজ আমাকে ইউএনও যাওয়ার বিষয়ে অবগত করে। ইউএনও স্যার আসার পর ওনার সাথে আমি কথা বলবো এমন সময় রাব্বি এসে আমার সঙ্গে থাকা সুইমকে গালাগাল করতে থাকে। এসময় সুইম রাগান্বিত হয়ে গেলে আমি তাকে সাইডে নেওয়ার সময় আমাকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
সাইফুল চেয়ারম্যান, শফিকুল, ইউপি সদস্য হাফিজ আমাকে হুমকি দিয়ে বলে ভালো হয়ে যা। ভারি নেতা হয়ে গেছিস। আমাকে হাসপাতালে নেওয়ার সময়ও তারা বাধাগ্রস্থ করে। আমি একজন ছাত্র তারা যদি আমাদের সাথেই এমন করে তাহলে সাধারণ মানুষের কি অবস্থা। তারা বিল দখল, ফার্ম দখল, জন্ম নিবন্ধন করতেও তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। তারা ক্ষমতায় না এসেই যা শুরু করেছে ক্ষমতায় আসলে কি হবে। আজ সকল ছাত্র—জনতা মিলে যে জন্য আমরা দেশটাকে স্বাধীন করলাম সেটা তো দেখছি এখন আর হচ্ছে না। আমি প্রশাসনের কাছে এর সঠিক বিচার চাই।

বিষয়টি নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলামের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন মেহেরপুর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক তামিম ইসলাম বলেন, ‘আশিক সবসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে ছিলো। জেলা কমিটিতে তার স্থান হয়নি। আমার জানা মতে উপজেলা কমিটিতে তার নাম আসতে পারে। আমি হাসপাতালে যেয়ে আশিককে দেখেছি। তার শরীরে মারধরের দাগ স্পষ্ট। আপনারা সাংবাদিকরা তদন্ত করে সঠিক তথ্য তুলে আনবেন এই অনুরোধ করছি। এবং প্রশাসন দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে সেই প্রত্যাশা করছি।’
মেহেরপুর সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা গাজী মূয়ীদুর রহমান বলেন, আমি সেখানে যাওয়ার আগেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী উপস্থিত হয়েছিল। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Total Page Visits: 193 - Today Page Visits: 8