মেহেরপুর প্রতিনিধি ।। জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তালন, স্মৃতিসৌধে শহীদদর প্রতিশ্রদ্ধা নিবেদন, গীতিনাট্য ও জনসভার মধ্য দিয় মেহেরপুরে পালিত হয়েছে ১৭ ই এপ্রিল মুজিবনগর দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মেহেরপুরের ঐতিহাসিক মুজিবনগরে গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশের প্রথম সরকার এবং সেই সরকারের শপথ অনুষ্ঠান। প্রতিবারের মত এবারও রাষ্ট্রীয়ভাবে দিনটি সারাদেশে পালন করা হচ্ছে।দিনটি উপলক্ষ্যে সকাল ১০ টায় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী সহ আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দরা হেলিকপ্টারযোগে মুজিবনগর পৌঁছান। সকাল ১০:২১ মিনিটে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুস্পমাল্য অর্পন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাসিম, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আফজাল হোসেন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মুনসুর আলম খান, পুলিশ সুপার রাফিউল আলম, মেহেরপুর পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটনসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয়রা।
পরে সকাল ১০:৩৫ মিনিটে মুজিবনগরে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে আনুষ্টানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মোজাম্মেল হক এবং মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মুনসুর আলম খান।
এরপরই পুলিশ, বিজিবি, আনসার, মুক্তিযোদ্ধা, ভিডিপি, বিএনসিসি, স্কাউট, গালসগাইড সহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের সম্বন্বয়ে গার্ড অব অনার এবং কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করা হয়। এরপর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ মুজিবনগরে স্থাপিত শেখ হাসিনা মঞ্চে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় যোগ দেন। সেখানে শুরুতেই পবিত্র কোরআন, বাইবেল ও ত্রিপিটক পাঠের মধ্যদিয়ে আলোচনা সভা শুরু হয়েছে।
আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাসিম। সম্মানিত অতিথি হিসাবে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এমপি। বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড.আফজাল হোসেন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি সহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা।
জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, জামায়াত-বিএনপির নেতারা মুজিবনগর সরকারকে মানেনা। জিয়াউর রহমান, মুশতাক মিল বঙ্গবন্ধুক হত্যা করে দেশের সার্ভভামত্ব বিনিষ্ট করতে চেয়েছিল। তারা আবার বাংলাদেশকে দেউলিয়া করতে চান। অথচ শ্রীলঙ্কার মতা বাংলাদেশ নয়, আমাদের দেশের রেমিটেন্স আছে, খাদ্য স্বয়ংসম্পুর্ন দেশ আমরা। এ দেশ কখনই শ্রিলঙ্করা মতো হবেনা বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, যারা মুজিবনগর সরকারকে মানেনা তারা বাংলাদশর স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে। তারা পাকিস্তানী বাহীনির পৃতাত্বা।
জনসভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। জিয়াউর রহমান, এরশাদ, বিএনপি নেতারা মিলে সাড়ে ২৯ বছর দেশ চালিয়ে দেশকে ধংশের দিকে ঠেলে দিয়ছিলো। তারা বাংলাদশক একটি অকার্যকর ও ব্যার্থ রাষ্ট্র পরিনত করেছিলা। অথচ ৫১ বছরের স্বাধীনতায় আওয়ামী লীগ সাড়ে ২১ বছর ক্ষমতায় থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পলাশীর আম্রকাননের যে সূর্য অস্তমিত গিয়েছিল ঠিক তারপর ১৯৭১ সালে এই মুজিবনগর আম্রকানন স্বাধীনতার সূর্য উদিত হয়েছিল। যারা আজকর স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি হিসেবে দাবি করেন তারাই ১৫ই আগস্টে বঙ্গবন্ধু সহ তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেছিল। কারাগারের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছিল। যেটি মানবতার ইতিহাসের সবচেয়ে য় কলঙ্কিত ঘটনা।
সমাবেশে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি বলেন, ১৯৭১ সালর ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরের এই পবিত্র মাটিত শপথ গ্রহণের পরপরই সমগ্র বাঙালি জাতি জেগে উঠেছিল। তার পরের ইতিহাসে ৯ মাসের রক্ত ক্ষয় যুদ্ধে, ৩০ লক্ষ শহীদ আর ২ লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশর স্বাধীনতা অর্জন।
আরো বলেন, ৭১ সালের ১৭ এপ্রিল এর পর থেকেই প্রতিবছর এই মুজিবনগরে যথার্থভাবে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদশ আওয়ামী লীগ ছাড়া জামায়ত-বিএনপিরা কখনই ১৭ এপ্রিল পালন করেনা। অথচ তারা স্বাধীনতার স্বপক্ষষের শক্তি বলে দাবি করে। তারা ইতিহাসকে বিকৃত করে । এতেই প্রমানিত হয় তাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরাধী শক্তির সাথে আতাত রয়েছে বলে দাবি করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।
এছাড়াও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
যারা মুজিবনগর সরকারকে অস্বীকার করে তারা স্বাধীনতাকে মানেনা- বাহাউদ্দিন নাছিম।
Total Page Visits: 974 - Today Page Visits: 5