গাংনীতে বাল্যবিবাহের ঘটনায় বর ও হবু শ্বশুরকে ৭ দিনের কারাদণ্ড

মেহেরপুরের গাংনীতে বাল্যবিবাহের ঘটনায় বর ও হবু শ্বশুরকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রবিবার (৮ মে), দুপুরের দিকে গাংনী উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, হেলাল উদ্দিনের বয়স ৩০ বছর হলেও এরপূর্বে ৩য় বিয়ে সম্পন্ন করে ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ১২ বছরের এক স্কুল ছাত্রীকে ৪র্থ বিয়ে করতে গিয়ে ধরা পড়েন পুলিশের হাতে। হেলাল উদ্দিন গাংনী উপজেলার সাহারবাটী গ্রামের এনামুল হকের ছেলে বলে জানা যায়।
হেলাল উদ্দিন ৪র্থ বিয়ের জন্য অনেক খোঁজা-খুঁজির পর কনে হিসেবে বেঁছে নেন একই উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ও একই গ্রামের সোহরাব হোসেনের মেয়েকে। দেনমোহর নির্ধারণ করা হয় নগদ ৩ হাজার টাকা। শুরু হয় বিয়ে পড়ানোর পালা। কবুল বলার আগেই উপস্থিত হন পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকেই পালিয়ে গেলেও বর ও কনের পিতা (হবু শ্বশুর) কে আটক করে পুলিশ।
শনিবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে মোহাম্মদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাত ১২ টা থেকে গাংনী থানা হেফাজতে আটক রাখার পর রবিবার দুপুরের দিকে গাংনী উপজেলা পরিষদ চত্বরে বর ও কনের নিজ নিজ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দ্বয়ের উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে কোন মেয়ের বিয়ে দেওয়া যাবেনা এবং ছেলেদের বয়স হবে ন্যূনতম ২১ বছর। তারই ধারাবাহিকতায় কনের পিতা হেলালের (হবু শ্বশুর) সোহরাব হোসেন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ করার কারণে তাকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও বর সেজে বিয়ে করতে যাওয়া হেলাল উদ্দিন ৩ টা বিয়ের পর আবারো ১২ বছরের একটি স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে বাল্য বিবাহ করতে যাওয়ার কারণে তাকেও ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড একই সাথে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয় । অনাদায়ে আরও ৭ দিনের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী খানম। এ সময় গাংনী থানা পুলিশের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী খানম জানান, গতকাল রাত ১২ টার দিকে মুঠোফোনে মটমুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল আহমেদ আমাকে অবগত করে ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ১২ বছরের একটি মেয়ের বাল্য বিবাহ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে গাংনী থানা কে অবগত করলে রাতে তাদের আটক করা হয়। এবং আজকে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করা হয়।