মুজিবনগর প্রতিনিধি:
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার কুদরত-ই খোদা ক্লিনিক ও ল্যাব ও মুজিবনগর স্টার ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসা ও রোগী মৃত্যুর ঘটনা যেন নিত্যদিনের। গত কয়েক মাসে ভুল অপারেশনে মৃত্যু হয়েছে দুইজনের আরও এক মহিলা ভুল অপারেশনে রয়েছে মৃত্যুশয্যায়। সব কটি অপারেশনই করেছে ডা. রিসার্ড সরেন নামের এক চিকিৎসক। এর আগে নবজাতকের মৃত্যুর দায়ে কোন ধরনের অপারেশন করবেন না বলে মুচলেকা দেন তিনি। তারপরও চালিয়ে যাচ্ছেন অপারেশনসহ নানা ধরনের চিকিৎসা। ডা. রিচার্ড সনের কোন সরকারি ডাক্তার না। তার ডাক্তারী নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে অনেকেই। মুজিবনগর উপজেলা যুবলীগ সভাপতি কামরুল হাসান চাদু’র মালিকানাধীন কুদরত-ই খোদা ক্লিনিক ও ল্যাবেই নিয়মিত বসেন তিনি। সেখানেই করেন বিভিন্ন ধরনের অপারেশন। নেই কোন অ্যানেসথেসিয়া। ডা. রিচার্ড সরেন নিজেই সব করেন। ক্লিনিকের অনেক ত্রুটি ও সমস্যার কথা স্বিকারও করেছেন ডাক্তাররা।
জানা গেছে, সম্প্রতি একই উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামে চায়না খাতুন (২৫) নামের এক রোগীর জরাযু টিউমার অপারেশন করতে গেলে ভুল অপারেশনে প্রসাবথলিতে সমস্যা দেখা দেয়। বর্তমানে চায়না খাতুন বাড়িতেই মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এ বিষয়ে চায়না খাতুনের স্বামী রিপন আলী জানান, ক্লিনিক থেকে নিয়ে মেহেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে বাড়িতে নেওয়া হয়। তবে কুদরত-ই খোদা ক্লিনিক কতৃপক্ষ পুনরায় নিজ খরচে চিকিৎসা দেবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান রিপন আলী।
চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি একই উপজেলার কেদারগঞ্জ বাজারের চা দোকানী রবিউল ইসলাম নামের একজনের স্ত্রী’র সিজার করতে গিয়ে ভুল অপারেশনে তার মৃত্যু হয়। রবিউল ইসলামের অভিযোগ অ্যানেসথেসিয়ার ওভার ডোজ ও অপারেশনের সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাট এর কারনেই মৃত্যু হয় স্ত্রীর।
এছাড়াও সম্প্রতী মুজিবনগর উপজেলার রামনগর গ্রামের এক প্রসূতি মায়ের সিজার করার পর নবজাতকের মৃত্যু হয়। এলাকাবাসীরা জানান, একের পর এক রোগীর মৃত্যু হলেও কোন ব্যবস্থায় নিচ্ছে না স্বাস্থ্য বিভাগ বা প্রশাসন।
মুজিবনগর থানাও এসআই ইসরাফিল হোসাইন মুচলেকা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এই ধরনের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আমরা অভিযোগ পাইনা বলে কিছুই করতে পারিনা।
ডা. রিসার্ড সরেন এর সাথে কথা হলে রোগী মৃত্যুর ঘটনা স্বিকার করে তিনি বলেন, আমাদের কিছু ত্রুটি আছে সেগুলো কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি। এছাড়াও একটি জরায়ু টিউমার অপারেশনে এক রোগীর সমস্যা হয়েছিল। পরবর্তিতে ক্লিানিকের পক্ষ থেকে তার চিকিৎসা করানো হয়েছে। মুচলেকা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি মুজিবনগর ক্লিনিক নামের একটি ক্লিনিকের ঘটনা। কথা ছিল শুধু মুজিবনগর ক্লিনিকে অপারেশন করতে পারবো না।
তবে ক্লিানিকে কোন ত্রুটি নেই বলে দাবি করেন কুদরত-ই খোদা ক্লিনিক ও ল্যাব এর মালিক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুল হাসান চাদু। তিনি বলেন, আমার ক্লিনিকে শতশত অপারেশন হয়। দু-একটা মারা যেতেই পারে। তাই বলে ক্লিনিকের কোন ত্রুটি আছে সেটাতো বলা যাবে না।
মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান জানান, আমরা সব গুলো ঘটনা শুনেছি। বিষয়টি সিভিল সার্জনকেও জাননো হয়েছে। আমরা নির্দেশ পেলেই ব্যবস্থা নেবো।
সিভিল সার্জন ডা. জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দকী বলেন, আমরা কোন লিখিতভাবে অভিযোগ পাইনি। কোন ভুক্তভোগী আমাদের অভিযোগ না করলে আমরা বিভাবে ব্যবস্থা নেবো। এছাড়াও কোন পত্র-পত্রিকাতেও এ বিষয়ে লেখালেখি হয়নি। যদি হতো সেটা দেখেও আমরা ওই ডাক্তার বা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারতাম।