মেহেরপুর সদর উপজেলার চাঁদবিল গ্রামের শ্রী গাড়ির মাঠে কৃষকের ২০ বিঘা জমির কলা কেটে তছরুপ করেছে দূর্বৃত্তরা। এতে কৃষকের আনুমানিক ৩০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্থ চাষীরা ।
রবিবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় কলা তছরুপের এই ঘটনা ঘটে।
চাঁদবিল গ্রামের কলা চাষী জসিম উদ্দীনের ৫ বিঘা, হাসেম আলীর আড়াই বিঘা, আব্দেল হকের ৩ বিঘা, আনিছুদ্দীনের দেড় বিঘা, তুফান আলীর ১ বিঘা, আব্দুর রাজ্জাকের ১০ কাঠাসহ মেহেরপুর শহরের প্রায় ১০ জন কৃষকের এই কলা তছরুপ করে দূর্বৃত্তরা।
চাঁদবিল গ্রামের কৃষক আব্দেল হক জানান, আমার গ্রামের সেলিম হোসেনের কাছ থেকে আমি ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়েছি। এই লিজ নেয়াকে কেন্দ্র করে বন্দর গ্রামের কলা চাষী খোরজেল হোসেনের সাথে মনোমানিল্য হয়। এই তিন বিঘা জমি আগে খোরজেলের কাছে লিজে ছিল। ওই জমি আমি লিজ নিলে খোরজেল আমাকে হুমকিও দিয়েছিল। তার হুমকি দেওয়ার কয়েক দিন পরেই এই মাঠের আমি সহ ১০ জন চাষীর কলা কেটে তছরুপ করে দিয়েছে।
কৃষক জসিম উদ্দীন বলেন, আমি অন্যের জমি লিজ নিয়ে কলা চাষ করি। এনজিওসহ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কলার চাষ করেছি। আমার জমির সব কলা কেটে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। আমি এখন কি করে ঋণ পরিশোধ করবো এ চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
ক্ষতিগ্রস্থ চাষী হাসেম আলী বলেন, কলা চাষ আমাদের একমাত্র অবলম্বন। কলা প্রায় বিক্রির উপযুক্ত হয়েছে। আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই কলা বিক্রি হবে। ঠিক বিক্রির সময়ে এত বড় ক্ষতি হয়ে গেলো। আমি এই দূর্বৃত্তদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
কলা চাষী আনিছুদ্দীন বলেন, আমি একজন বর্গা চাষী। অন্যের জমি লিজ নিয়ে কলা চাষ করেছি। আমি জনপাট খেটে খায়। আমার তো সবই হারিয়ে গেলো।
এসব কৃষকরা জানান তাদের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এঘটনায় সন্দেহভাজনদের আসামি করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা।
সদর উপজেলা কৃষি অফিসার নাসরিন আক্তার জানান, ১৫ থেকে ২০ বিঘা জমির প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার কাঁদি কলা তছরুপ করা হয়েছে। সকালে খবর পেয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ শংকর কুমার মজুমদার ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন। এসব ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সরকারি সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম সরেজমিনে তদন্ত করে এসেছেন। কৃষকরা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।